গর্ভধারণের ১০ টি প্রাথমিক লক্ষণ (10 primary symptoms of Pregnancy):
০১. মাসিক মিস হওয়া: মাসিক যাদের যদি সঠিক চক্র মেনে চলে এবং যদি ঠিক সময়ে মাসিক না হয়, তবে বাসায় প্রেগনেন্সি টেস্ট করা যেতে পারে। তবে মাসিক যাদের অনিয়মিত হয় এবং ঠিকমতো হিসাব রাখা না হয়, তবে বমি ভাব, স্তনে ব্যাথা এবং বেশি বেশি বাথরুমে যাওয়ার দিকে খেয়াল করতে হবে।
০২. বর্ধিত শারীরিক তাপমাত্রা: একনাগাড়ে ১৮ দিনের বেশি স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা বেশি অনুভব হলে, তবে তা গর্ভবতী হবার লক্ষণ হতে পারে।
০৩. স্পটিং ও সাদা স্রাব: সহবাসের পর নিষিক্ত ডিম্বানু নিজেকে জরায়ুর দেয়ালে আটকে নেয়। এসময় স্পটিং (স্বল্প রক্তপাত) ও মাসিকের ব্যাথার মতো ব্যাথা হতে পারে এবং এগুলো গর্ভধারণের খুব প্রাথমিক সময়ের লক্ষণ। এধরনের স্পটিংকে Implantation bleeding বলে, যেটা গর্ভধারণের ৬ থেকে ১২ দিনের মাঝে হতে পারে।
০৪. বমি বমি ভাব: সাধারণত গর্ভধাণের এক মাসের আগে বমি বমি ভাব দেখা দেয় না। তবে কখনও কখনও গর্ভধারণের দুই সপ্তাহের মাঝেই বমিভাব দেখা দেয়। সাধারণত সকালেই এই বমিভাব হয়, তবে অনেকের এই সমস্যা সময় মেনে চলে না। প্রায় অর্ধেকের মতো গর্ভবতী মহিলা তাদের দ্বিতীয় ট্রিমেস্টারের শুরুতে বমিভাব থেকে মুক্তি পায়, আর বাকিদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা আর মাসখানেক দীর্ঘায়িত হতে পারে।
০৫. স্তন কোমল ও স্ফীত হওয়া: গর্ভধারণের পর শরীরে বিশেষ কিছু হরমোন প্রবাহের কারণে স্তনযুগল বেশ স্পর্শকাতর হয়ে পড়ে, যা কি না গর্ভধারণের আরেকটি চিহ্ন। স্তনের এই ফুলে ওঠা এবং ব্যাথা অনেকটা মাসিক পূর্ববর্তী অবস্থায় ব্যাথার মত। তবে এই ব্যাথাযুক্ত অবস্থা প্রথম ট্রিমেস্টারেই শেষ হয়ে যাবে।
০৬. অবসন্নবোধ: মাঝেমাঝেই আচমকা ক্লান্ত বোধ করা কিংবা ক্লান্তিতে ভেঙ্গে পড়া গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ।
০৭. ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ: হরমোনগত পরিবর্তনের কারণে এরসময় শরীরে যে ক’টি পরিবর্তন আসে তার একটি হল রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি। রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধির ফলে বার বার প্রস্রাবের বেগ হয়। এই উপসর্গ প্রথম ট্রিমেস্টার বা ৬ সপ্তাহের মাথায় দেখা যাবে। এই অবস্থা বেশ কিছুদিন চলতে থাকবে এবং শরীরে বাচ্চা বড় হওয়ার সাথে সাথে এই সমস্যা আরও বাড়তে থাকবে।
০৮. পেট ফুলে যাওয়া: হরমোনগত পরিবর্তনের কারণে এসময় সন্তান সম্ভবা মায়ের পেট ফুলে যাওয়ার অনুভুতি হয়। এটা অনেকটা মাসিক হবার আগ মুহুর্তের অনুভুতি। এসময় এরকম মনে হতে পারে যে, পরিধেয় বস্ত্র কোমরের কাছে ছোট হয়ে গেছে।
০৯. মন মেজাজের উঠানামা: সম্ভবা মায়ের শরীরে এসময় হরমোন বদলের কারণে ব্রেনের অভ্যন্তরে মেসেজ বহনকারী নিউরোট্রান্সমিটারের পরিমানে পরিবর্তন আসে। এই পরিবতৃন বিভিন্ন জনে বিভিন্নরকম হয়ে থাকে। সম্ভবা মা এসময় বেশ আবেগী অনুভব করেন, আবার অনেকে এসময় বিষন্নতা/দুশ্চিন্তায় ভোগেন। এসময় মন মেজাজের কোন ঠিক ঠিকানা থাকেনা।
১০. খাবারে অনীহা: গর্ভবস্থার শুরুর দিকে খাবারে অনীহা বোধ হওয়া বেশ স্বাভাবিক। বিশেষ কোন খাদ্যদ্রব্যের (যেমন পেয়াজ) গন্ধ বমি ভাব নিয়ে আসে তবে খেয়াল করতে হবে এমনটা ক্রমাগত হচ্ছে কি না। এসময় খুব পছন্দের কোন খাবার খেতে বিস্বাদ স্বাভাবিক।
গর্ভধারণের ১০ টি প্রাথমিক লক্ষণ (10 primary symptoms of Pregnancy)
পূর্বের লেখা পড়তে ক্লিক করুন-গর্ভধারণ পূর্ববর্তী ও পরবর্তী যত্ন সমূহ (Pre- and post-pregnancy care)
পরবর্তী লেখা পড়তে ক্লিক করুন-শিশুকে সঠিকভাবে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর নিয়ম (Optimal Breast-Feeding Practices)