প্রিয় শিক্ষার্থী এখন আলোচনা করবো একজন ইঞ্জিনিয়ার বা ইলেকট্রিশিয়ানের নির্মাণ সেক্টরে বৈদ্যুতিক কাজ (Electrical Works in Construction Sector) কিকি কাজ করতে হয়।
নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজে নিয়োজিত ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ:
১. ইলেকট্রিক্যাল ফিটিংস্ ও ফিক্সার স্থাপনের নিমিত্তে লে-আউট তৈরী করা
২. ফিটিংস্ ও ফিক্সার সমূহ একজোট করা
৩. বৈদ্যুতিক স্থাপনার ত্রুটি মেরামত করা
৪. বৈদ্যুতিক স্থাপনা রক্ষনাবেক্ষণ করা
৫. ইলেকট্রিক্যাল ফিক্সার, যন্ত্রপাতি, নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র এবং বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং সংযোজন ও তাদের ক্রিয়াকলাপ (Performance) পরীক্ষা করা
নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজে নিয়োজিত ইলেকট্রিশিয়ানের পেশাগত কাজ, দায়িত্ব ও মূল্যবোধ:
১. বৈদ্যুতিক কাজের নকশার ভাব ভাষা বুঝতে পারা ও তদানুসারে কাজ করা
২. তার ও ক্যাবলে জয়েন্ট সম্পাদন এবং বর্তনী তৈরীর নিমিত্তে বৈদ্যুতিক ফিক্সার সহ বর্তনীর বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে আন্ত:সংযোগ সাধন করা।
৩. বর্তনী নিরাপদে চলছে কিনা বা চলবে কিনা তা নিশ্চিত হবার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা সম্পাদন
৪. ত্রুটি যুক্ত বর্তনীর ত্রুটি সনাক্তকরণ
৫. দেয়ালে কন্ডুইট বা চ্যানেল স্থাপন এবং কন্ডুইট বা চ্যানেলের মধ্যে দিয়ে তার টানা
৬. দলবদ্ধ ভাবে কাজ করার সময় সুপারভাইজার ও অন্যান্য দক্ষকর্মীদের সাথে কার্যকর যোগাযোগ ও সুসম্পর্ক বজায় রাখা
৭. বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক প্রকল্পে কাজ করা
নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজে নিয়োজিত ইলেকট্রিশিয়ানের কর্মক্ষেত্র:
নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজে নিয়োজিত বেশির ভাগ ইলেকট্রিশিয়ান পূর্ণকালীন, খন্ডকালীন, মেয়াদী, প্রকল্প থেকে প্রকল্প ভিত্তিক অথবা আত্ম-কর্মসংস্থানে নিয়োজিত থাকতে পারে।
যাই হোক, এ পেশার পেশাজীবিদের কর্মসংস্থান হতে পারে-
১. আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাতার অধীনে
২. বৈদ্যুতিক সাব-কন্ট্রাক্টরের অধীনে
৩. আত্ম-কর্মসংস্থানের মাধ্যমে
নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজে নিয়োজিত ইলেকট্রিশিয়ানের অনুরুপ যোগ্যতা ও দক্ষতা নিন্মোক্ত পেশাগুলোতেও ব্যবহৃত হয়:
১. ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইলেক্ট্রিশিয়ান
২. ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেকানিক
৩. এপ্লাইয়্যান্স সার্ভিস টেকনিশিয়ান
৪. ইলেকট্রোনিক্স সার্ভিস টেকনিশিয়ান
৫. ইন্ডাস্ট্রিয়াল উড ওয়ার্কার
বাংলাদেশের নির্মাণ সেক্টর: বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। এদেশের বেশির ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে। স্বাধীনতার পরও নগরায়ন এদেশে মন্থর গতিতেই চলছিল। কারন বাংলাদেশ খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ নয়। তেল, গ্যাস, কয়লা যা নির্মান কাজে শক্তির যোগান দেয় তা এখানে অপ্রতুল। নির্মান কাজের অত্যাবশ্যকীয় উপাদান রড তৈরীর জন্য লোহা, সিমেন্ট তৈরীর মুল উপাদান ক্লিংকার এদেশের মাটিতে পাওয়া যায় না। কিন্তু বর্তমানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো অর্থ এবং গার্মেন্টস রপ্তানীর মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে প্রচুর পরিমানে নির্মাণ সামগ্রী আমদানি করা হচ্ছে এবং নির্মান কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। বর্তমান বাংলাদেশের পেক্ষাপটে নির্মাণ সেক্টরের সাথে জড়িত কর্মীগণ অত্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে এবং তাদের কদর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইহা একটি সম্ভবনাময় সেক্টরে পরিনত হয়েছে যা বহু কর্মীকে এ সেক্টরে তাদের পেশা খুজে নিতে উৎসাহিত করছে। অল্প কথায় বললে বলা যায়, বর্তমানে নির্মাণ সেক্টরে কাজ করার উপযোগী দক্ষ শ্রমিকের কাজের অভাব নেই। দেশের যে কোন স্থানে যে কোন মৌসুমে এ সেক্টরের কর্মীগন তাদের কাজের সংস্থান করে নিতে পারে।
এখন এই পর্যন্ত এটি একটি সিরিজ টিউটরিয়াল তাই বাকী অংশ পড়ুন পরের পোষ্টে।
পূর্বের লেখা পড়তে ক্লিক করুন-বৈদুতিক কাজে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা (OHS) এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জাম
পরবর্তী লেখা পড়তে ক্লিক করুন-কর্মস্থলে আপদ চিহ্নিতকরণ (Workplace Disaster Identification)
One comment
Pingback: কর্মস্থলে আপদ চিহ্নিতকরণ (Workplace Disaster Identification)